হাবুলের দিনকাল মোটেও ভালো যাচ্ছে না । ভালো যাবে কি করে ? বউ ছাড়া বিবাহিত পুরুষের জীবন তো অনেকটা লবন ছাড়া বাসি তরকারির মত ! মধু ছাড়া মৌচাকের কি কোন দাম আছে ? আগের গল্পে বলেছি যে হাবুলের বউ বাড়িওয়ালার ছেলের সাথে ভেগে গিয়েছে । ইদানিং হাবুল একটা হৃদয় বিদারক ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন দেখে । স্বপ্নটা হল এই রকম , তার বউ তাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে তার চোখের সামনেই বাড়িওয়ালার ঐ ছেলের সাথে ফষ্টিনষ্টি করে , লীলাখেলা করে । স্বপ্নের মধ্যেই হাবুল তাদের মুগুর দিয়ে পেটাতে যায় , কিন্তু প্রতিবার পেটানোর ঠিক আগ মুহূর্তে তার স্বপ্নটা ভেঙ্গে যায় ।
তাছাড়া হাবুলের অর্থনৈতিক অবস্থাও ইদানিং অত্যন্ত শোচনীয় । পকেটে পয়সা না থাকলে রাস্তার ফকির ও ভেংচি কাটে । হাবুলের মনে খায়েশের কি শেষ আছে ? পকেটে পয়সা থাকলে সে তার বউয়ের অভাব বনেদি কোন নাইট ক্লাবে অথবা হিল্টন হোটেলে গিয়ে পূরণ করতে পারত ! নাইট ক্লাবে মৃদু মিউজিক এর তালে তালে স্বল্পবসনা কোন বারবনিতার সাথে তার বিশাল পাহাড়সম শরীর নিয়ে নাচতে পারত ! প্রতি পেগ হুইস্কির স্বাদ আস্বাদনের মাধ্যমে তার জীবনটাকে তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করতে পারত !
বউয়ের অভাব এবং টাকাপয়সার অভাব হাবুলকে বিষধর কালসাপের মত ক্ষণে ক্ষণে ছোবল মারতে লাগলো । হতাশার তীব্র আগুনে হাবুল জ্বলে পুড়ে ছারখার হতে লাগলো । আপাতত হতাশার আগুনটাকে ছাইচাপা দিয়ে এই দুঃসহ বেদনা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য হাবুল তার জিগরি দোস্ত বাবুলের কাছে গেল ।
হাবুল - বাবুইল্লা ! সহজে টাকা পয়সা কামানো যায় এই রকম একটা ধান্দা দিতে পারবি ?
বাবুল - শোন , হাবুল , টাকা পয়সা তোর চারপাশে পাখির মত ডানা মেলে উড়ছে ! একটু হাত বাড়ালেই তুই বস্তার পর বস্তা টাকা জমাতে পারবি ।
হাবুল - ঢঙের প্যাঁচাল বাদ দে ব্যাটা ! টাকা কি বলদের পাছা দিয়ে গর গর করে পড়ে যে বস্তার পর বস্তা টাকা জমাতে পারব ! শালা খবিশ !
বাবুল - তুই সারা জীবন আবুল ই রয়ে গেলি । তোর চারপাশে যে বাতাস আছে , ইথার নামের বস্তু আছে , তা কি তুই দেখিস ?
হাবুল - না ।
বাবুল - তেমনি তোর চারপাশে যে টাকা উড়ছে , ঢং করে কোমর দুলিয়ে নাচছে তা তুই কিভাবে দেখবি ?
হাবুল - দেখ ! আমার টেম্পার কিন্তু হট হয়ে আছে । এক চটকানা দিয়ে কিন্তু তোর কানাপট্টি ধরিয়ে দিব । কোন ওয়ে থাকলে বল , নইলে ইয়ে করে ঝালমুড়ি খা !
বাবুল - আমার কাছে কঠিন একটা আইডিয়া আছে ! সূর্য ভুল করে পশ্চিম দিকে উঠতে পারে , মোরগ ভুল করে ডিম পারতে পারে কিন্তু আমার আইডিয়ার কোন ভুল হতে পারে না ।
হাবুল - কি আইডিয়া ?
বাবুল - তোকে রিকশাওয়ালা হতে হবে ।
হাবুল - কি ? আমাকে রিকশাওয়ালা হতে হবে ? তোকে পাগলা কুত্তায় কামড়িয়েছে ? তুই জানিস না , আমার প্রপিতামহ নবাব সলিমুল্লাহর খাস চামচা ছিল ?
বাবুল - প্যান প্যান না করলে কি তোর হয় না ? এত বার বলি কথার মাঝখানে নাক গলাবি না , খালি বগর বগর করে !
হাবুল - ঠিক আছে যা অফ মারলাম । এবার বল ।
বাবুল - শোন তাহলে । সেই রিকশায় করে রাতের বেলা তুই প্যাসেঞ্জার দের ভুলিয়ে ভালিয়ে পাতলাখান লেন এর গলিতে নিয়ে আসবি । আমি সেখানে একটা ছুরি নিয়ে অপেক্ষা করব । তুই আসার সাথে সাথে আমি প্যাসেঞ্জার কে হাইজ্যাক করব । তারপর প্যাসেঞ্জার এর সবকিছু লুণ্ঠন করে ন্যাংটো করে বাড়ি পাঠিয়ে দেব ।
হাবুল - ( উচ্ছ্বসিত হয়ে ) তোর মাথায় এত বুদ্ধি ! ওয়াও ! তাহলে তো আমরা দুদিনেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যাবরে !
বাবুল - খেয়াল রাখিস ! আঙ্গুলই যাতে ফোলে ! অন্য কিছু ফুলে গেলে আবার সমস্যা ! এমনিতেই তুই লো ভোল্টেজের মানুষ ! তোর তো আবার বউ থাকেনা ! শালা আবাল !
হাবুল - দেখ ! বাবুইল্লা ! আমার তো তাও বিয়ে হইছে ! তোর যখন এত মুরোদ আর ভোল্টেজ , একটা বিয়ে করে দেখিয়ে দে না ! ব্যাটা চল্লিশ বছরের ঝুনা নারিকেল হয়ে গেছিস !
মোক্ষম জায়গাতে আঘাত খাওয়ার পর বাবুলের মুখখানা পেঁচার মত হয়ে গেল !
গত কয়েকমাস হাবুল রিকশা চালানোর উপর একটি শর্ট কোর্স করেছে । তাছাড়া সে রিকশাওয়ালাদের অন্যান্য গুন যেমন , আকিজ বিড়ি খাওয়া , সপ্তাহে একবার হলে গিয়ে ছাকিপ খানের ছবি দেখা , অশ্রাব্য গালগালাজ করা , পান্তাভাত খাওয়া , ছেড়া ফাড়া জামাকাপড় পড়া , যেখানে সেখানে মূত্র বিসর্জন করা , দাঁত কেলিয়ে কথা বলা ইত্যাদি আয়ত্ত করেছে । মাঝে মাঝে তার মুখে গানের কলি ফোটে , " তু তু তু তু তারা , মরজিনার মায় মার্কা মারা " অথবা , " ও সখিনা , গেছস কিনা ভুইলা আমারে ! " শুধু হাবুল না ব্যাকআপ হিসেবে বাবুল ও রিকশা চালান শিখেছে । ঠিক হল , একদিন হাবুল প্যাডেল মারবে , আরেক দিন বাবুল প্যাডেল মারবে ।
আজ হাবুল ও বাবুল দুজনের মনেই যুগপৎ ভয় এবং উত্তেজনার একটি ঢেউ বয়ে যাচ্ছে । আজই তারা অপারেশন এ নেমে যাবে ! পূর্বের প্লান অনুযায়ী বাবুল পাতলাখান লেনের গলিতে চাকু নিয়ে দাঁড়িয়ে রইল আর হাবুল গেল রিকশাতে খ্যাপ মারতে শাহবাগে ।
ক্রিং ক্রিং শব্দে বেল বাজিয়ে রাত ১২ তা বাজে হাবুল তার রিকশাতে একজন প্যাসেঞ্জার নিয়ে পাতলাখানে এল । আর বিদ্যুৎ গতিতে বাবুল তার চাকু নিয়ে প্যাসেঞ্জারের উপর হামলে পড়ল । অবশেষে হাবুল আর বাবুল দুজন ই ফাটা বেলুনের মত চুপসে গেল । কারণ , হাবুল যে প্যাসেঞ্জার এনেছে ঐ ব্যাটা শাহবাগ থানার সামনে ভিক্ষা করে । কিন্তু শালা ভিক্ষুক ব্যাটা এতটাই ফুটানিবাজ আর রঙবেরঙের জামাকাপড় পড়েছে যে হাবুল বুঝতেই পারেনি ঐ ব্যাটা তার চেয়েও অধম । চাঁদের আলোতে হাবুলের ছুরির চকচকা ফলা দেখে ভিক্ষুক ব্যাটা কিছু একটা ত্যাগ করে দিল । সেই দুর্গন্ধে রাস্তার নেড়ি কুকুরেরা কেউ কেউ শব্দ করে পালিয়ে গেল । ভিক্ষুকের কাছ থেকে ভিক্ষা করে জমানো ৫০ টাকা আট আনা কেড়ে নিল তারা ।
ভিক্ষুক - আল্লায় তগো লুলা বানাইয়া দিব , ল্যাংড়া বানাইয়া দিব , রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা কইরা বেরাবি তোরা , ভুস্কির পোলারা !
বাবুল - শালা খয়রাতির জাত ! সারাদিন মাত্র ৫০ টাকা কামাইসস ! আবার রিকশা ফুটাইতে গেছে ! ভাগলি এইখান থেকে ! ( এরপর বাবুল অর্ধচন্দ্র দিয়ে রিকশাওয়ালা কে বের করে দিল । )
হাবুল - বাবুইল্লা ! আমাদের তো লস হয়ে গেলরে ! মহাজন কে দিতে হবে ১০০ টাকা , কিন্তু কামালাম মাত্র ৫০ টাকা ! খাব কি ? মহাজন কে দিব কি ?
বাবুল - দিন দিন তোর মাথায় গোবরের পরিমান সমানুপাতিক হারে বাড়ছে । মহাজনের গুষ্টি কিলানোর টাইম আছে ? মহাজন শালারে একটা বাঁশ দেই চল । এই রিকশাটা চুরি করে তেজগাঁতে নিয়ে যাই । ঐখানে আমাদের অপারেশন " ছিনতাই স্টর্ম " চলবে । মহাজনেও আমাদের খুঁজে পাবে না ।
হাবুল - কিন্তু চুরি করা তো মহাপাপ !
বাবুল - শালা আবুল কোথাকার ! তাহলে ছিনতাই করা কি ?
পরের দিন কানাগলিতে হাবুল চাকু নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকল । আজ বাবুল আর কোন ভুল করতে চায় না । ফকির মিসকিনদের ছিনতাই করে হাত কালো করতে চায় না । গুলশান নাইট ক্লাবের সামনে সে রিকশা নিয়ে দাঁড়াল । আজ বোধয় বাবুলের রাশি ভালো । অল্প সময়ের মধ্যে সে যাত্রী পেয়ে গেল । একজন মাতাল পুরুষ আর একজন মাতাল মহিলা । মহিলার জামাকাপড় অত্যন্ত অগোছালো । তারা নাকি তেজগাঁও যাবে । এত দেখা যায় মেঘ না চাইতেই জল । অত্যধিক আনন্দে বাবুল গান শুরু করে দিল , " তু তু তু তু তারা , মরজিনার মায় মার্কা মারা । " সেই গানের তালে রিকশার হুডের নিচেই ঐ মহিলা আর পুরুষ শরীরটাকে সাপের মত মচড়িয়ে নাচ শুরু করে দিল ।
ছিনতাই করতে গিয়ে হাবুল বিষম ভাবে টাশকি খেল । ঐ মহিলা যে তার ভেগে যাওয়া বউ আর ঐ পুরুষ তার বাড়িওয়ালার ছেলে । রাগে গজরাতে গজরাতে হাবুল ঐ লোকের শার্টের সব বোতাম কেটে দিল । শার্ট খোলানোর পর সে ভয়ানক ভাবে ভড়কে গেল । লোকটার সারা শরীরে লিপিস্টিকের ঠোঁটের ছাপ । রাগে , দুঃখে আর অভিমানে হাবুল তার বউয়ের চুল টানতে লাগলো আর ঐ লোকটার মাজাতে লাথি মারতে লাগলো । কিন্তু তাদের মাতাল ভাব এখনো কাটেনি । মহিলা বলতে লাগলো , " হার্ডার বেবি হার্ডার । " আর লোকটা বলতে লাগলো , " ডোন্ট কিক অন মাই হিপ " । অবশেষে তাদের কাছ থেকে ৫০০০ টাকা , দুইটা মোবাইল , স্বর্ণের একটা চেইন , আর দুটো ঘড়ি পাওয়া গেল । লোকটাকে হাবুল প্রায় ন্যাংটো করে ছেড়ে দিল আর তার ভেগে যাওয়া বউ কে মানবিক দিক বিবেচনা করে মাফ করে দিল । দুজনের পশ্চাৎ দেশে দুটো রাম লাথি দিয়ে তারা ছেড়ে দিল ।
অল্প কয়েকদিনের মধ্যে হাবুল আর বাবুল আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ না নারকেল গাছ হয়ে গেল । তারা দুজন এখন নাইট ক্লাবে রাত কাটায় , চাতক পাখির মত বিদেশি ব্র্যান্ডের হুইস্কি দিয়ে গলা ভেজায় , দেশি বিদেশি বারবনিতাদের সাথে ডিস্কো ড্যান্স দেয় । কিন্তু হতভাগাদের কপালে সুখ সয় না । আর তাছাড়া এক মাঘে কখনো শীত যায় না । এক ছদ্মবেশী র্যাব তাদের রিকশার যাত্রী হয়েছিল । যখনি বাবুল তাকে ছুরিটা দেখাল তখনি র্যাব মহাশয় সিনেমাটিক স্টাইলে তার সাদাকাপড় খুলে কালো ড্রেস বের করে ফেলল ।
তার পরের কাহিনী অতি করুন । জেল খানায় হাবুল আর বাবুলের পিছন দিয়ে গরম গরম ডিম ভরা হল । ইলেকট্রিক চেয়ারে তাদের পরম মমতার সাথে বসতে দেয়া হল । ফ্যানের সাথে রশি দিয়ে তাদের হাত বেঁধে দোলনার মত দোলানো হল । মোটা মোটা লাঠি দিয়ে তাদের বাঁশডলা দেয়া হল , ইত্যাদি ইত্যাদি ।
জেল থেকে মুক্তির পর হাবুল আর বাবুল এক মাস ঢাকা মেডিকেলের ২১৯ নাম্বার ওয়ার্ডে পড়ে রইল । সেখানেও তারা নার্সদের সাথে বাঁদরামি করতে ভুলল না । তারা এমন সব অভিনয় করতে লাগলো যে নার্সেরা তাদের বাথরুমে পর্যন্ত নিতে বাধ্য হল । নার্সেরা যখন তাদের ডিম খাওয়াতো তখন তারা নার্সের আঙ্গুল কামড়ে দিত আর বলত , " আমাদের দুই দিক দিয়ে ডিম খাওয়ার অভ্যাস আছে । "
সুস্থ হয়ে হাবুল আর বাবুল নতুন প্লান নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ল । এবার তারা ঘটকালি করবে । তাদের এজেন্সির নাম হল , " ঘটক হাবা ভাই এজেন্সি । " হাবার হা হল হাবুলের নামের আদ্যক্ষর , আর বা হল বাবুলের নামের আদ্যক্ষর । ঘটক এজেন্সি খোলার উদ্দেশ্য তিনটি ।
১।
সহজে টাকা কামানো ।
২।
সুন্দরী মেয়েদের সাথে ফষ্টিনস্টি করা । আর
৩।
অতি সুন্দরী বড়লোক মেয়ে পেলে তাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে বিয়ে করা ।
তারা একটা সাইনবোর্ড বানাল আর সাইনবোর্ডে লিখে দিল যে প্রথম পঞ্চাশ জন ক্লায়েন্টের ( যাদের বিয়ে হবার সম্ভাবনা প্রায় শূন্য ) বিনা টাকায় বর খুঁজে দেয়া হবে ।
একদিন বাবুল তাদের নতুন অফিসে চশমা পরে , ছেঁড়া একটা কোট পরে , শরীরে মান্ধাতা আমলের সেন্ট মেখে , মাথায় সরিষার তেল মেখে অত্যন্ত ভাব নিয়ে বসে ছিল । এমন সময় হন্তদন্ত হয়ে হাবুল অফিসে ছুটে এল ।
হাবুল - বাবুইল্লা ! খবর খুব খারাপ ! নিচে ৫০ জন ক্লায়েন্ট দাঁড়িয়ে রয়েছে । আমার তো বাথরুম পাচ্ছে রে !
বাবুল - এটা তো খুব ভালো খবর রে ! প্রথম দিনেই ৫০ জন ! সুন্দরী ৪ টা পেলে তো তুই ২ টা নিবি , আর আমি ২ টা নিব ।
হাবুল উত্তর না দিয়ে বাথরুমে চলে গেল । নীচে গিয়ে বাবুল যা দেখল তাতে তারও বাথরুমের বেগ পেল । এ কি দেখছে সে !
নীচে ৫০ জন হিজড়া দাঁড়িয়ে আছে ।
দৌড়ে এসে বাবুল অফিসের টেবিলের নিচে লুকিয়ে রইল । হিজড়া রা অফিসে এসে গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে রইল । চারজন হিজড়া বাবুল কে টেবিলের নিচ থেকে বের করে আনল । ইতিমধ্যে হাবুল ও বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসল ।
হিজড়া ১ - ছাইয়া , ছাইয়া ! আমাগো বিয়া দে রে !
হিজড়া ২ - অলে অলে ! আমাগো কেউ বিয়া করবার চায় না রে !
ইতিমধ্যে কয়েকজন হিজড়া ঘুরে ঘুরে কাপড় তুলে তুলে বিদঘুটে নাচ শুরু করে দিল । কয়েকজন আবার একসাথে বাথরুমের দরজা খুলে বাথরুম করতে লাগলো । দুর্গন্ধে অফিসের বাতাস ভারি হয়ে উঠল । হাবুল আর বাবুলের শরীর থর থর করে কাঁপতে লাগলো । তারা হিজড়াদের কাছে মাফ চাইল । কয়েকজন হিজড়া আবার হাবুল বাবুলের ঠোঁটে লিপিস্টিক লাগিয়ে দিল ।
হিজড়া ৩ - হয়ে হয়ে ! আমরা এগো দুই জনরে শেয়ারে বিয়া করবার পারি । কি কও দিদি রা ? কি মাক্ষনের মত দেখতে , দেখছ নি !
সবাই সম্মতি দিল ।
হিজড়া ৪ - কি ও মিয়ারা আমাগো বিয়া করবা ? নাচ দেখামু , গান শুনামু , আরও অনেক কিছু দেখামু । এহন দেখবানি ? ( এই বলে সে তার পরনের শাড়ি খুলতে লাগলো । )
হাবুল আর বাবুল রুদ্ধশ্বাসে অফিস থেকে রাস্তায় নেমে এল । উসাইন বোল্টের গতিতে দৌড় দিল তারা ।
ওদিকে পিছন পিছন ৫০ হিজড়ার দল তাদের ধরার জন্য দৌড়াচ্ছে । বিয়ে করার আনন্দে তারা আজ উদ্বেলিত ।
তাছাড়া হাবুলের অর্থনৈতিক অবস্থাও ইদানিং অত্যন্ত শোচনীয় । পকেটে পয়সা না থাকলে রাস্তার ফকির ও ভেংচি কাটে । হাবুলের মনে খায়েশের কি শেষ আছে ? পকেটে পয়সা থাকলে সে তার বউয়ের অভাব বনেদি কোন নাইট ক্লাবে অথবা হিল্টন হোটেলে গিয়ে পূরণ করতে পারত ! নাইট ক্লাবে মৃদু মিউজিক এর তালে তালে স্বল্পবসনা কোন বারবনিতার সাথে তার বিশাল পাহাড়সম শরীর নিয়ে নাচতে পারত ! প্রতি পেগ হুইস্কির স্বাদ আস্বাদনের মাধ্যমে তার জীবনটাকে তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করতে পারত !
বউয়ের অভাব এবং টাকাপয়সার অভাব হাবুলকে বিষধর কালসাপের মত ক্ষণে ক্ষণে ছোবল মারতে লাগলো । হতাশার তীব্র আগুনে হাবুল জ্বলে পুড়ে ছারখার হতে লাগলো । আপাতত হতাশার আগুনটাকে ছাইচাপা দিয়ে এই দুঃসহ বেদনা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য হাবুল তার জিগরি দোস্ত বাবুলের কাছে গেল ।
হাবুল - বাবুইল্লা ! সহজে টাকা পয়সা কামানো যায় এই রকম একটা ধান্দা দিতে পারবি ?
বাবুল - শোন , হাবুল , টাকা পয়সা তোর চারপাশে পাখির মত ডানা মেলে উড়ছে ! একটু হাত বাড়ালেই তুই বস্তার পর বস্তা টাকা জমাতে পারবি ।
হাবুল - ঢঙের প্যাঁচাল বাদ দে ব্যাটা ! টাকা কি বলদের পাছা দিয়ে গর গর করে পড়ে যে বস্তার পর বস্তা টাকা জমাতে পারব ! শালা খবিশ !
বাবুল - তুই সারা জীবন আবুল ই রয়ে গেলি । তোর চারপাশে যে বাতাস আছে , ইথার নামের বস্তু আছে , তা কি তুই দেখিস ?
হাবুল - না ।
বাবুল - তেমনি তোর চারপাশে যে টাকা উড়ছে , ঢং করে কোমর দুলিয়ে নাচছে তা তুই কিভাবে দেখবি ?
হাবুল - দেখ ! আমার টেম্পার কিন্তু হট হয়ে আছে । এক চটকানা দিয়ে কিন্তু তোর কানাপট্টি ধরিয়ে দিব । কোন ওয়ে থাকলে বল , নইলে ইয়ে করে ঝালমুড়ি খা !
বাবুল - আমার কাছে কঠিন একটা আইডিয়া আছে ! সূর্য ভুল করে পশ্চিম দিকে উঠতে পারে , মোরগ ভুল করে ডিম পারতে পারে কিন্তু আমার আইডিয়ার কোন ভুল হতে পারে না ।
হাবুল - কি আইডিয়া ?
বাবুল - তোকে রিকশাওয়ালা হতে হবে ।
হাবুল - কি ? আমাকে রিকশাওয়ালা হতে হবে ? তোকে পাগলা কুত্তায় কামড়িয়েছে ? তুই জানিস না , আমার প্রপিতামহ নবাব সলিমুল্লাহর খাস চামচা ছিল ?
বাবুল - প্যান প্যান না করলে কি তোর হয় না ? এত বার বলি কথার মাঝখানে নাক গলাবি না , খালি বগর বগর করে !
হাবুল - ঠিক আছে যা অফ মারলাম । এবার বল ।
বাবুল - শোন তাহলে । সেই রিকশায় করে রাতের বেলা তুই প্যাসেঞ্জার দের ভুলিয়ে ভালিয়ে পাতলাখান লেন এর গলিতে নিয়ে আসবি । আমি সেখানে একটা ছুরি নিয়ে অপেক্ষা করব । তুই আসার সাথে সাথে আমি প্যাসেঞ্জার কে হাইজ্যাক করব । তারপর প্যাসেঞ্জার এর সবকিছু লুণ্ঠন করে ন্যাংটো করে বাড়ি পাঠিয়ে দেব ।
হাবুল - ( উচ্ছ্বসিত হয়ে ) তোর মাথায় এত বুদ্ধি ! ওয়াও ! তাহলে তো আমরা দুদিনেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যাবরে !
বাবুল - খেয়াল রাখিস ! আঙ্গুলই যাতে ফোলে ! অন্য কিছু ফুলে গেলে আবার সমস্যা ! এমনিতেই তুই লো ভোল্টেজের মানুষ ! তোর তো আবার বউ থাকেনা ! শালা আবাল !
হাবুল - দেখ ! বাবুইল্লা ! আমার তো তাও বিয়ে হইছে ! তোর যখন এত মুরোদ আর ভোল্টেজ , একটা বিয়ে করে দেখিয়ে দে না ! ব্যাটা চল্লিশ বছরের ঝুনা নারিকেল হয়ে গেছিস !
মোক্ষম জায়গাতে আঘাত খাওয়ার পর বাবুলের মুখখানা পেঁচার মত হয়ে গেল !
গত কয়েকমাস হাবুল রিকশা চালানোর উপর একটি শর্ট কোর্স করেছে । তাছাড়া সে রিকশাওয়ালাদের অন্যান্য গুন যেমন , আকিজ বিড়ি খাওয়া , সপ্তাহে একবার হলে গিয়ে ছাকিপ খানের ছবি দেখা , অশ্রাব্য গালগালাজ করা , পান্তাভাত খাওয়া , ছেড়া ফাড়া জামাকাপড় পড়া , যেখানে সেখানে মূত্র বিসর্জন করা , দাঁত কেলিয়ে কথা বলা ইত্যাদি আয়ত্ত করেছে । মাঝে মাঝে তার মুখে গানের কলি ফোটে , " তু তু তু তু তারা , মরজিনার মায় মার্কা মারা " অথবা , " ও সখিনা , গেছস কিনা ভুইলা আমারে ! " শুধু হাবুল না ব্যাকআপ হিসেবে বাবুল ও রিকশা চালান শিখেছে । ঠিক হল , একদিন হাবুল প্যাডেল মারবে , আরেক দিন বাবুল প্যাডেল মারবে ।
আজ হাবুল ও বাবুল দুজনের মনেই যুগপৎ ভয় এবং উত্তেজনার একটি ঢেউ বয়ে যাচ্ছে । আজই তারা অপারেশন এ নেমে যাবে ! পূর্বের প্লান অনুযায়ী বাবুল পাতলাখান লেনের গলিতে চাকু নিয়ে দাঁড়িয়ে রইল আর হাবুল গেল রিকশাতে খ্যাপ মারতে শাহবাগে ।
ক্রিং ক্রিং শব্দে বেল বাজিয়ে রাত ১২ তা বাজে হাবুল তার রিকশাতে একজন প্যাসেঞ্জার নিয়ে পাতলাখানে এল । আর বিদ্যুৎ গতিতে বাবুল তার চাকু নিয়ে প্যাসেঞ্জারের উপর হামলে পড়ল । অবশেষে হাবুল আর বাবুল দুজন ই ফাটা বেলুনের মত চুপসে গেল । কারণ , হাবুল যে প্যাসেঞ্জার এনেছে ঐ ব্যাটা শাহবাগ থানার সামনে ভিক্ষা করে । কিন্তু শালা ভিক্ষুক ব্যাটা এতটাই ফুটানিবাজ আর রঙবেরঙের জামাকাপড় পড়েছে যে হাবুল বুঝতেই পারেনি ঐ ব্যাটা তার চেয়েও অধম । চাঁদের আলোতে হাবুলের ছুরির চকচকা ফলা দেখে ভিক্ষুক ব্যাটা কিছু একটা ত্যাগ করে দিল । সেই দুর্গন্ধে রাস্তার নেড়ি কুকুরেরা কেউ কেউ শব্দ করে পালিয়ে গেল । ভিক্ষুকের কাছ থেকে ভিক্ষা করে জমানো ৫০ টাকা আট আনা কেড়ে নিল তারা ।
ভিক্ষুক - আল্লায় তগো লুলা বানাইয়া দিব , ল্যাংড়া বানাইয়া দিব , রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা কইরা বেরাবি তোরা , ভুস্কির পোলারা !
বাবুল - শালা খয়রাতির জাত ! সারাদিন মাত্র ৫০ টাকা কামাইসস ! আবার রিকশা ফুটাইতে গেছে ! ভাগলি এইখান থেকে ! ( এরপর বাবুল অর্ধচন্দ্র দিয়ে রিকশাওয়ালা কে বের করে দিল । )
হাবুল - বাবুইল্লা ! আমাদের তো লস হয়ে গেলরে ! মহাজন কে দিতে হবে ১০০ টাকা , কিন্তু কামালাম মাত্র ৫০ টাকা ! খাব কি ? মহাজন কে দিব কি ?
বাবুল - দিন দিন তোর মাথায় গোবরের পরিমান সমানুপাতিক হারে বাড়ছে । মহাজনের গুষ্টি কিলানোর টাইম আছে ? মহাজন শালারে একটা বাঁশ দেই চল । এই রিকশাটা চুরি করে তেজগাঁতে নিয়ে যাই । ঐখানে আমাদের অপারেশন " ছিনতাই স্টর্ম " চলবে । মহাজনেও আমাদের খুঁজে পাবে না ।
হাবুল - কিন্তু চুরি করা তো মহাপাপ !
বাবুল - শালা আবুল কোথাকার ! তাহলে ছিনতাই করা কি ?
পরের দিন কানাগলিতে হাবুল চাকু নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকল । আজ বাবুল আর কোন ভুল করতে চায় না । ফকির মিসকিনদের ছিনতাই করে হাত কালো করতে চায় না । গুলশান নাইট ক্লাবের সামনে সে রিকশা নিয়ে দাঁড়াল । আজ বোধয় বাবুলের রাশি ভালো । অল্প সময়ের মধ্যে সে যাত্রী পেয়ে গেল । একজন মাতাল পুরুষ আর একজন মাতাল মহিলা । মহিলার জামাকাপড় অত্যন্ত অগোছালো । তারা নাকি তেজগাঁও যাবে । এত দেখা যায় মেঘ না চাইতেই জল । অত্যধিক আনন্দে বাবুল গান শুরু করে দিল , " তু তু তু তু তারা , মরজিনার মায় মার্কা মারা । " সেই গানের তালে রিকশার হুডের নিচেই ঐ মহিলা আর পুরুষ শরীরটাকে সাপের মত মচড়িয়ে নাচ শুরু করে দিল ।
ছিনতাই করতে গিয়ে হাবুল বিষম ভাবে টাশকি খেল । ঐ মহিলা যে তার ভেগে যাওয়া বউ আর ঐ পুরুষ তার বাড়িওয়ালার ছেলে । রাগে গজরাতে গজরাতে হাবুল ঐ লোকের শার্টের সব বোতাম কেটে দিল । শার্ট খোলানোর পর সে ভয়ানক ভাবে ভড়কে গেল । লোকটার সারা শরীরে লিপিস্টিকের ঠোঁটের ছাপ । রাগে , দুঃখে আর অভিমানে হাবুল তার বউয়ের চুল টানতে লাগলো আর ঐ লোকটার মাজাতে লাথি মারতে লাগলো । কিন্তু তাদের মাতাল ভাব এখনো কাটেনি । মহিলা বলতে লাগলো , " হার্ডার বেবি হার্ডার । " আর লোকটা বলতে লাগলো , " ডোন্ট কিক অন মাই হিপ " । অবশেষে তাদের কাছ থেকে ৫০০০ টাকা , দুইটা মোবাইল , স্বর্ণের একটা চেইন , আর দুটো ঘড়ি পাওয়া গেল । লোকটাকে হাবুল প্রায় ন্যাংটো করে ছেড়ে দিল আর তার ভেগে যাওয়া বউ কে মানবিক দিক বিবেচনা করে মাফ করে দিল । দুজনের পশ্চাৎ দেশে দুটো রাম লাথি দিয়ে তারা ছেড়ে দিল ।
অল্প কয়েকদিনের মধ্যে হাবুল আর বাবুল আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ না নারকেল গাছ হয়ে গেল । তারা দুজন এখন নাইট ক্লাবে রাত কাটায় , চাতক পাখির মত বিদেশি ব্র্যান্ডের হুইস্কি দিয়ে গলা ভেজায় , দেশি বিদেশি বারবনিতাদের সাথে ডিস্কো ড্যান্স দেয় । কিন্তু হতভাগাদের কপালে সুখ সয় না । আর তাছাড়া এক মাঘে কখনো শীত যায় না । এক ছদ্মবেশী র্যাব তাদের রিকশার যাত্রী হয়েছিল । যখনি বাবুল তাকে ছুরিটা দেখাল তখনি র্যাব মহাশয় সিনেমাটিক স্টাইলে তার সাদাকাপড় খুলে কালো ড্রেস বের করে ফেলল ।
তার পরের কাহিনী অতি করুন । জেল খানায় হাবুল আর বাবুলের পিছন দিয়ে গরম গরম ডিম ভরা হল । ইলেকট্রিক চেয়ারে তাদের পরম মমতার সাথে বসতে দেয়া হল । ফ্যানের সাথে রশি দিয়ে তাদের হাত বেঁধে দোলনার মত দোলানো হল । মোটা মোটা লাঠি দিয়ে তাদের বাঁশডলা দেয়া হল , ইত্যাদি ইত্যাদি ।
জেল থেকে মুক্তির পর হাবুল আর বাবুল এক মাস ঢাকা মেডিকেলের ২১৯ নাম্বার ওয়ার্ডে পড়ে রইল । সেখানেও তারা নার্সদের সাথে বাঁদরামি করতে ভুলল না । তারা এমন সব অভিনয় করতে লাগলো যে নার্সেরা তাদের বাথরুমে পর্যন্ত নিতে বাধ্য হল । নার্সেরা যখন তাদের ডিম খাওয়াতো তখন তারা নার্সের আঙ্গুল কামড়ে দিত আর বলত , " আমাদের দুই দিক দিয়ে ডিম খাওয়ার অভ্যাস আছে । "
সুস্থ হয়ে হাবুল আর বাবুল নতুন প্লান নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ল । এবার তারা ঘটকালি করবে । তাদের এজেন্সির নাম হল , " ঘটক হাবা ভাই এজেন্সি । " হাবার হা হল হাবুলের নামের আদ্যক্ষর , আর বা হল বাবুলের নামের আদ্যক্ষর । ঘটক এজেন্সি খোলার উদ্দেশ্য তিনটি ।
১।
সহজে টাকা কামানো ।
২।
সুন্দরী মেয়েদের সাথে ফষ্টিনস্টি করা । আর
৩।
অতি সুন্দরী বড়লোক মেয়ে পেলে তাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে বিয়ে করা ।
তারা একটা সাইনবোর্ড বানাল আর সাইনবোর্ডে লিখে দিল যে প্রথম পঞ্চাশ জন ক্লায়েন্টের ( যাদের বিয়ে হবার সম্ভাবনা প্রায় শূন্য ) বিনা টাকায় বর খুঁজে দেয়া হবে ।
একদিন বাবুল তাদের নতুন অফিসে চশমা পরে , ছেঁড়া একটা কোট পরে , শরীরে মান্ধাতা আমলের সেন্ট মেখে , মাথায় সরিষার তেল মেখে অত্যন্ত ভাব নিয়ে বসে ছিল । এমন সময় হন্তদন্ত হয়ে হাবুল অফিসে ছুটে এল ।
হাবুল - বাবুইল্লা ! খবর খুব খারাপ ! নিচে ৫০ জন ক্লায়েন্ট দাঁড়িয়ে রয়েছে । আমার তো বাথরুম পাচ্ছে রে !
বাবুল - এটা তো খুব ভালো খবর রে ! প্রথম দিনেই ৫০ জন ! সুন্দরী ৪ টা পেলে তো তুই ২ টা নিবি , আর আমি ২ টা নিব ।
হাবুল উত্তর না দিয়ে বাথরুমে চলে গেল । নীচে গিয়ে বাবুল যা দেখল তাতে তারও বাথরুমের বেগ পেল । এ কি দেখছে সে !
নীচে ৫০ জন হিজড়া দাঁড়িয়ে আছে ।
দৌড়ে এসে বাবুল অফিসের টেবিলের নিচে লুকিয়ে রইল । হিজড়া রা অফিসে এসে গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে রইল । চারজন হিজড়া বাবুল কে টেবিলের নিচ থেকে বের করে আনল । ইতিমধ্যে হাবুল ও বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসল ।
হিজড়া ১ - ছাইয়া , ছাইয়া ! আমাগো বিয়া দে রে !
হিজড়া ২ - অলে অলে ! আমাগো কেউ বিয়া করবার চায় না রে !
ইতিমধ্যে কয়েকজন হিজড়া ঘুরে ঘুরে কাপড় তুলে তুলে বিদঘুটে নাচ শুরু করে দিল । কয়েকজন আবার একসাথে বাথরুমের দরজা খুলে বাথরুম করতে লাগলো । দুর্গন্ধে অফিসের বাতাস ভারি হয়ে উঠল । হাবুল আর বাবুলের শরীর থর থর করে কাঁপতে লাগলো । তারা হিজড়াদের কাছে মাফ চাইল । কয়েকজন হিজড়া আবার হাবুল বাবুলের ঠোঁটে লিপিস্টিক লাগিয়ে দিল ।
হিজড়া ৩ - হয়ে হয়ে ! আমরা এগো দুই জনরে শেয়ারে বিয়া করবার পারি । কি কও দিদি রা ? কি মাক্ষনের মত দেখতে , দেখছ নি !
সবাই সম্মতি দিল ।
হিজড়া ৪ - কি ও মিয়ারা আমাগো বিয়া করবা ? নাচ দেখামু , গান শুনামু , আরও অনেক কিছু দেখামু । এহন দেখবানি ? ( এই বলে সে তার পরনের শাড়ি খুলতে লাগলো । )
হাবুল আর বাবুল রুদ্ধশ্বাসে অফিস থেকে রাস্তায় নেমে এল । উসাইন বোল্টের গতিতে দৌড় দিল তারা ।
ওদিকে পিছন পিছন ৫০ হিজড়ার দল তাদের ধরার জন্য দৌড়াচ্ছে । বিয়ে করার আনন্দে তারা আজ উদ্বেলিত ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Ei Golpo Gulo Pore Bastob Jibone Keo Practice Korte Jaben Na, Moja Nin Sudhu"
Ja khusi likhun,kintu lekhok ke ukti kore kono karap comment korben na,eta sob patoker kache onurodh,kono other site link post korben na,tahole coment publish kora hobe na...................